রেবতী বর্মণ একজন প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। তার জন্ম ১৯০৯ সালের ২৭ জুন পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার সিতাই গ্রামে। রেবতী বর্মণের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে গ্রামীণ পরিবেশে। তিনি প্রথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন গ্রামের স্কুলে, পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
রেবতী বর্মণের কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতা দিয়ে। তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান অসামান্য। শিক্ষার্থীদের প্রতি তার আন্তরিকতা ও নিবেদিতপ্রাণ সেবার জন্য তিনি সবার প্রিয় শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং বাংলাসাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।
রেবতী বর্মণের লেখালেখি জীবনে তিনি গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধসহ নানা ধরণের সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন। তার লেখা গল্প ও উপন্যাসে গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন দিক, সামাজিক সমস্যা এবং মানবিক সম্পর্কের সূক্ষ্মতা ফুটে উঠেছে। তিনি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতি ও সমাজকে তার লেখনীর মাধ্যমে জীবন্ত করে তুলেছেন। তার রচিত বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে "পল্লীবাসী," "নদী ও নারী," এবং "গ্রামের মাটি" বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
তার কৃতিত্বের মধ্যে অন্যতম হলো বাংলা সাহিত্যে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রাপ্ত নানা পুরস্কার ও সম্মাননা। তিনি বাংলা আকাদেমি পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারসহ আরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার লাভ করেন।
রেবতী বর্মণ ১৯৮৭ সালের ১৫ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পরেও তার সাহিত্যকর্ম এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান তাকে স্মরণীয় করে রেখেছে। তার রচিত গ্রন্থ ও শিক্ষার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি আজও পাঠক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেরণা যোগায়।